হাজারী লেইনে জেলা প্রশাসনের সাঁড়াশি অভিযান: ২৯ মামলায় প্রায় ১১ লক্ষ টাকা জরিমানা
৭জুন,রোববার,কমল চক্রবর্তী,চট্টগ্রাম,নিউজ একাত্তর ডট কম: ওষুধের মুল্যবৃদ্ধি, কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি, ফার্মেসিস্ট সার্টিফিকেট না থাকা, আনরেজিস্টার্ড ওষুধ রাখা,বিদেশী অবৈধ ওষুধ রাখা, মূল্য কর্তন করা, নকল পিপিই,মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখার মতো কাজ করতে এতটুকু পিছপা হচ্ছে না অসাধু ওষুধ ব্যবসায়ীরা। তাদের লাগাম টেনে ধরতে জেলা প্রশাসনের চারজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এর নেতৃত্বে নগরীর পাইকারী ওষুধ মার্কেট হাজারী গলিতে অভিযান পরিচালিত হয়। এসময় ২৯ মামলায় ১০ লাখ ৯৩ হাজার টাকা অর্থদণ্ড করেন ভ্রাম্যমান আদালত।
আজ রবিবার ৭ জুন দুপুর ২ টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত চলা অভিযানে নেতৃত্ব দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শিরীন আক্তার, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এস এম আলমগীর হোসেন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ উমর ফারুক ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট গালিব চৌধুরী। অভিযানে উপস্থিত ছিলেন ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক হোসাইন মোহাম্মদ ইমরান ও কামরুল হাসান, Rab ও পুলিশের সদস্যরা।
অভিযানে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শিরীন আক্তার ও এস এম আলমগীর হোসেন পরিচালিত ভ্রাম্যমান আদালত ১৪ জন ফার্মেসী ব্যাবসায়ীকে ৭ লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করেন।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শিরীন আক্তার জানান, করোনা মহামারীনে পুঁজি করে হাজারি লেইনের ঔষধ দোকানদারদের বিরুদ্ধে ওষুধের মুল্যবৃদ্ধি, ওষুধের কিত্রিম সংকট সৃষ্টি, ফার্মেসিস্ট সার্টিফিকেট না থাকা, আনরেজিস্টার্ড ওষুধ রাখা, নকল পিপিই,মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিক্রির অনেক অভিযোগ ছিল। আজকের অভিযানে এসে এসবের সত্যতা পাই। জাবেদ মেডিকোতে গিয়ে দেখা যায় দেরারচ্ছে বিভিন্ন কোম্পানীর আনরেজিস্টার্ড ও বিভিন্ন যৌন উত্তেজক ওষুধ বিক্রি করছে। একই দোকানে হোমিও, ইউনানী ও এলোপাথিক ওষুধ বিক্রি করছে যা বেআইনি। আজকের অভিযানে জাবেদ মেডিকোকে ৫০ হাজার টাকাসহ ১৪ টি মামলায় ৭ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়।
তারমধ্যে সার্ভিস এন্ড কর্পোরেশনকে ৫০ হাজার টাকা, মাসুম সার্জিক্যাল মার্টকে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা,বাচা বাবা মেডিকেল হলকে ৫০ হাজার টাকা,আশা সার্জিক্যাল কে ৫০ হাজার টাকা,আল আমিন সার্জিক্যালকে ৫০ হাজার টাকা,বিসমিল্লাহ মেডিকেল হলকে ২০ হাজার টাকা,নিহার সার্জিক্যাল কে ৫০ হাজার টাকা,মা ফাতেমা মেডিকেল হলকে ৫০ হাজার টাকা,মা ফাতেমা মেডিকেল হলকে ৫০ হাজার টাকা,ফ্রেন্ডস ফার্মেসিকে ৩০ হাজার টাকা, হযরত তুফান আলী শাহ মেডিকেলকে ১০ হাজার টাকা, জাভেদ মেডিকোকে ৫০ হাজার টাকা, অন্তরা ফার্মেসীকে ২০ হাজার টাকা, চট্টলা ফার্মেসীকে ২০ হাজার টাকা ও মিনা সার্জিক্যালকে এক লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়।
তিনি আরও জানান, এছাড়া প্রায় ১০ লক্ষ টাকার ঔষধ জব্ধ করা হয়। জব্ধকৃত তালিকায় আছে নকল মাস্ক, নকল হ্যান্ড স্যানিটাইজা্র,নকল পিপি, নকল জীবানুনাশক,অননুমোদিত মেডিকেল ডিভাইস, যৌন উত্তেজক ঔষুধ,মেয়াদ উওীর্ণ ঔষুধ।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট গালিব চৌধুরী জানান, আজকে ডিসি স্যারের নির্দেশে আমরা ঔষধের পাইকারি বাজার হাজারি লেইনে অভিযান চালাই। অভিযানে আনরেজিস্টার্ড ওষুধ রাখা,বিদেশী অবৈধ ওষুধ রাখা, মূল্য কর্তন করা, নকল পিপিই,মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখার দায়ে অসাধু ব্যবসায়ীদের ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ উমর ফারুক জানান, অভিযানে ওষুধের মুল্যবৃদ্ধি, সংকট সৃষ্টি, ফার্মেসিস্ট সার্টিফিকেট না থাকা, আনরেজিস্টার্ড ওষুধ রাখা,বিদেশী অবৈধ ওষুধ রাখা, মূল্য কর্তন করা, নকল পিপিই,মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখার দায়ে অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসন, চট্টগ্রাম ভ্রাম্যমান আদালতের এ অভিযান পরিচালনা করেন। তিনি ৩ লক্ষ ৪৩ হাজার টাকা জরিমানা করেন। তার মধ্যে এনাম মেডিকেলকে ৫০ হাজার টাকা , মেমোরি ড্রাগ হাউস কে ৫০ হাজার টাকা, নিউ চট্টলা মেডিকেল কে ৫০হাজার টাকা ,সবুজ ফার্মেসী কে ৪০ হাজার টাকা ,সন্ধ্যা ড্রাগ হাউস কে ৪০ হাজার টাকা ,গোপাল মেডিকেল কে ৩০ হাজার টাকা, যমুনা মেডিকেল কে ৩০ হাজার টাকা, আনিকা ড্রাগ হাউসকে ৩০ হাজার টাকা ,ভাই ভাই ট্রেডার্স কে ১৮ হাজার টাকা ও চট্রশলা এন্টারপ্রাইজ কে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
জনস্বার্থে এ ভ্রাম্যমান আদালতের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শিরীন আক্তার।