বাজার দর ঠিক রাখতে কঠোর অবস্থানে জেলা প্রশাসন, দিনব্যাপী অভিযান
০২মে,শনিবার,কমল চক্রবর্তী,চট্টগ্রাম,নিউজ একাত্তর ডট কম: করোনা পরিস্থিতি ও রমজানের কারনে ভোগ্য পন্যের বাজার অনেকটাই বেসামাল। তাই বাজার দর ঠিক রাখতে কঠোর অবস্থানে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। সেই লক্ষ্যে সামাজিক দুরত্ব বজায়ে সচেতনতার পাশাপাশি বাজার মনিটরিং এ নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয় নগরীর বিভিন্ন স্থানে। এসময় মূল্য তালিকা প্রদর্শন না করা ও বেশী দামে পন্য বিক্রির দিয়ে কয়েকজনকে জরিমানা করা হয়।
আজ শনিবার ২ এপ্রিল সকাল ১০ টা থেকে বিকাল ৫:৩০ পর্যন্ত জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ নগরীর গুরুত্বপূর্ণ বাজার ও স্থান গুলোতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট গালিব চৌধুরী বন্দর, ইপিজেড ও পতেঙ্গা এলাকায় করোনা ভাইরাসজনিত প্রাদুর্ভাব প্রতিরোধের লক্ষ্যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও সিএমপি পুলিশের সহযোগিতায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। অভিযানে সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে দোকান খালা রাখায় বন্দর, ইপিজেড ও পতেঙ্গা থানার বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে অর্থদণ্ড প্রদান করেন। পাশাপাশি পতেঙ্গা থানাধীন কাটগড় বাজারের রিদওয়ান স্টোরকে ৩,০০০ (তিন হাজার টাকা) অর্থদণ্ড প্রদান করেন। তিনি ১২টি মামলায় ১৫,৩০০টাকা জরিমানা করেন।
মহানগরীর চকবাজার, কোতায়ালী,বাকলিয়া,সদরঘাট এলাকায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আলী হাসান। অভিযানে চাক্তাইয়ে ২ টি সেলুন ও টেইলার্স খোলা থাকায় তিনি ১,০০০(এক হাজার ) টাকা জরিমানা করেন। বাজার মনিটরিং এর আওতায় চকবাজার,সদরঘাট ও ফিরিঙ্গীবাজার এলাকায় ৭ টি খুচরা মুদি দোকানে মূল্য তালিকা না থাকার অপরাধে ১০,৩০০(দশ হাজার তিনশত) টাকা জরিমানা করেন। কোতায়ালী, ও চকবাজারে অবস্থিত টিসিবি কর্তৃক পণ্য বিক্রি পর্যবেক্ষণ করেন এবং পুলিশের সহযোগিতায় সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিতকরণে ব্যবস্থা নেন। তিনি ৯ টি মামলায় ১১,৩০০(এগার হাজার তিনশত) টাকা জরিমানা করেন।
র্নিবাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুরাইয়া ইয়াসমিন বায়েজিদ, খুলশি,পাঁচলাইশ ও চাঁন্দগাও এলাকায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে ১১টি মামালায় ১৪,৫০০টাকা জরিমানা করেন।
র্নিবাহী ম্যাজিস্ট্রেট কাজী তাহমিনা সারমিন ডবলমুরিং, পাহাড়তলী, হালিশহর ও আকবরশাহ এলাকায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন। ঈদগা কাঁচা রাস্তায় আবিদ কমপ্লেক্স নামে একটি মার্কেটের অনেকগুলো দোকান খোলা দেখে গাড়ি থেকে নামার সাথে সাথে মোবাইল কোর্টের উপস্থিতি টের পেয়ে অনেকেই পালিয়ে যায়। এর মধ্যে দুইটি দোকানকে ৫০০ টাকা করে ১,০০০ টাকা জরিমানা করা হয়, মালিক সমিতির সাথে কথা বলা হয় এর পর থেকে যাতে আর দোকান খোলা না পাওয়া যায় সে ব্যাপারে সতর্ক করা হয়। বাজার মনিটরিং এর অংশ হিসেবে নগরীর দক্ষিণ পাহাড়তলীর কিছু খুচরা দোকানে মূল্যতালিকা না থাকায় দুইটি দোকানকে ১৫০০ জরিমানা করা হয়। একটি সেলুনের দোকানকে ২০০ টাকা জরিমানা করা হয়।
আকবরশাহ থানাধীন এলাকায় একটি হাড়ি পাতিলের দোকানকে ৫,০০০ (পাঁচ হাজার )টাকা জরিমানা করা হয়। তিনি ৬টি মামলায় ৭,৭০০(সাত হাজার সাতশত) টাকা জরিমানা করেন।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ তৌহিদুল ইসলাম চট্টগ্রাম মহানগরীর আগ্রাবাদ,চৌমুহনী এলাকার কর্ণফুলী মার্কেটে সিএমপির পুলিশ সদস্যদের সহায়তায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা করেন। এসময় দোকানে মূল্য তালিকা বিহীনভাবে যথেচ্ছা পণ্য বিক্রির দায়ে এক দোকান মালিককে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন-২০০৯ মোতাবেক ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
এরপর আগ্রাবাদ কর্ণফুলী মার্কেটের কাঁচাবাজারে অভিযান পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। এসময় কর্ণফুলী দোকান মালিক সমিতিকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এর পাশাপাশি দোকান মালিক সমিতির উপস্থিতিতে কাঁচাবাজার এবং মুদি বাজারের সকল দোকান সমূহে নায্যদামে পণ্য বিক্রির মূল্যতালিকা লাগানো নিশ্চিত করা হয়। কাঁচাবাজারে অভিযানে এক ক্রেতার কাছে অন দ্য স্পট অভিযোগের ভিত্তিতে এক সবজি ব্যবসায়ীকে চড়া দামে কাঁচামরিচ বিক্রির দায়ে দুই হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। উক্ত সবজি ব্যবসায়ী ৪০ টাকা কেজি দরে কিনে আনা কাঁচামরিচ ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছিলেন।
র্নিবাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ উমর ফারুক বন্দর, ইপিজেড, পতেঙ্গা এলাকায় সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যদের নিয়ে এলাকাগুলোর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে হ্যান্ড মাইকের মাধ্যমে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখতে অনুরোধ করেন। তিনি ৭টি মামালায় ১০,০০০(দশ হাজার )টাকা জরিমানা করেন।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নগরীর বাকলিয়া, মোঃ আশরাফুল আলম সদরঘাট, কোতোয়ালি, এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন ।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো: আশরাফুল আলম এর নেতৃত্বে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর একটি দল মূল রাস্তার পাশাপাশি বিভিন্ন অলিতে গলিতে তল্লাশি ও অভিযান পরিচালনা করেন। পাশাপাশি সুশৃঙ্খলভাবে যাতে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত থাকে এবং ত্রাণ বিতরণের সময় ত্রাণ দাতা এবং ত্রাণ গ্রহীতা সকলের সামজীক দুরত্ব নিশ্চিত করা হয়। পাশাপাশি বাজার মনিটরিং করা হয়। অভিযান পরিচালনা কালে ৫ টি মামলার মাধ্যমে ৮৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রেজওয়ানা আফরিন হালিশহর,পাহাড়তলি, ডবলমুরিং, আকবরশাহ এলাকায় দুপুর ২ টা হতে ৫ টা মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন। এসময় ৩টি মামলায় ২৩০০ টাকা জরিমানা করেন।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শিরীন আক্তার
দুপুর ২টা থেকে বিকাল ৫ঃ০০ টা পর্যন্ত সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে ও বাজার মনিটরিং এর অংশ হিসেবে নগরীর পাঁচলাইশ, খুলশী, বায়েজিদ,চান্দগাও এলাকায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে ৪টি মামলায় ৫৫,০০০ টাকা জরিমানা করেন।