মুজিববর্ষ: জয় বাংলা স্লোগানে মুখরিত পতেঙ্গার সাগরপাড়
০২জানুয়ারী,বৃহস্পতিবার,ষ্টাফ রিপোর্টার,চট্টগ্রাম,নিউজ একাত্তর ডট কম: সাগর পাড়ে আছড়ে পড়া ঢেউয়ের মতো উত্তাল হয়ে উঠেছিল কয়েক হাজার নারীর কণ্ঠ। জয় বাংলা স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠেছিল পতেঙ্গার সাগর পাড়ের বিস্তৃত এলাকা। নীলাম্বরীতে সুসজ্জিত কয়েক হাজার নারী জানান দিচ্ছিল দিনকাল পাল্টে গেছে। নারীরা আর ঘরে আটকে থাকতে নয়, সমাজ বদলে দেয়ার মিশন শুরু করেছে। বন্দর পতেঙ্গা আসনের সাংসদ এম এ লতিফের হাতে গড়া ৩৬ হাজার নারীর সংগঠন স্বাধীনতা নারী শক্তির সদস্যরা গতকাল এভাবে জানান দিচ্ছিল এক নীরব বিপ্লবের কথা। বন্দর পতেঙ্গা এলাকার নারীরা নিজেদের এমন এক উচ্চতায় নিয়ে গেছে যে, তারাও পুরুষের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নিজের সংসারের ও সমাজের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করছে। আর নারীদের নিজের পায়ে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখার পথ দেখিয়েছেন এমএ লতিফ এমপি। গতকাল মুজিববর্ষের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকীতে তারা নানা আয়োজনে বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছে। তারা এমএ লতিফকে ৩৬ হাজার নারীর অভিভাবক হিসেবেও ঘোষণা দিয়েছে।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে মুজিববর্ষ ২০২০ সালকে স্বাগত জানাতে চট্টগ্রাম-১১ আসনের সাংসদ এমএ লতিফের উদ্যোগে বছরব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে স্বাধীনতা নারী শক্তি গতকাল সকালে পতেঙ্গার নেভাল স্পটে নারী সমাবেশ ও আনন্দ Raillyর আয়োজন করে। সমাবেশে হাজার দশেক নারী জড়ো হয়। সমাজের উচ্চবিত্ত থেকে শুরু করে নিম্নবিত্তের গার্মেন্টস শ্রমিক পর্যন্ত একই কাতারে বসে জানান দেয় নিজেদের উপস্থিতি। পুরো রাস্তা জুড়ে এক হাজার ফুট দীর্ঘ সামিয়ানা টানানো হয়। সবার পরনে ছিল নীল শাড়ি। হাতে বঙ্গবন্ধুর প্ল্যাকার্ড। লাল জমিনে বঙ্গবন্ধুর সাদা কালো ছবি। হাজার হাজার নারী কখনো হাত তালি দিয়ে আবার কখনো জয় বাংলা স্লোগানে মুখরিত করে তোলে পুরো এলাকা। অত্যন্ত সুশৃঙ্খল ভাবে এই নারীরা সমাবেশ ও Railly করেছে।
সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে নারীশক্তির প্রতিষ্ঠাতা এমএ লতিফ বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা নারীর ক্ষমতায়নের মাধ্যমে দেশকে উন্নত দেশে পরিণত করার লক্ষ্যে কাজ করছেন। নারীদের জনশক্তিতে রূপান্তরে দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে স্বাধীনতা নারীশক্তি সংগঠনটি গড়ে তুলেছি। এখন সদস্য সংখ্যা ৩৬ হাজার। তাদের গাড়ি চালানো, কম্পিউটার কোর্স, বিদেশি ভাষা শিক্ষা, উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলার জন্য বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। আমি মনে করি, তারা স্বাবলম্বী হলে বাংলাদেশ স্বনির্ভর হবে।
তিনি বলেন, মুজিব বর্ষ উপলক্ষে বছরব্যাপী কল্যাণমূলক কাজ করবে স্বাধীনতা নারীশক্তি। পতেঙ্গা থেকে রেল স্টেশন পর্যন্ত আমার সংসদীয় এলাকা। এত বড় এলাকার প্রতিটি ঘরের সমস্যা নারীশক্তির সদস্যদের মাধ্যমে জানতে পারি। ন্যায্যমূল্যে খাদ্যপণ্য বিক্রি থেকে শুরু করে তারা প্রচুর পরিশ্রম করেন। আমি গরীবদের ভালোবাসি। তাদের সন্তানদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছি, তারা কর্মক্ষেত্রে সফল হবে। যারা পড়ালেখায় ভালো নয়, তাদের কারিগরি শিক্ষা দেবো, খেলোয়াড় হিসেবে গড়ে তুলবে।
এম. এ. লতিফ এমপি বলেন, আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আহবান ও নির্দেশনায় দেশের নারী সমাজকে আত্মনির্ভর ও মর্যাদাশীল, সর্বোপরি নারী সমাজের জীবনমান উন্নয়নে আমরা নারী, আমরা সব পারি এবং আমরা নারী, আমরা বল, নারী শক্তি এগিয়ে চল স্লোগানকে ধারণ করে নারীদের কল্যাণে ২০১৭ সালে স্বাধীনতা নারী শক্তি প্রতিষ্ঠা করি।
তিনি সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে বলেন-অধিকার কেউ কাউকে দেয় না, অধিকার আদায় করে নিতে হয়। তিনি বলেন-বঙ্গবন্ধু আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। তিনি আরো বলেন-আপনারা মায়ের জাতি, আপনাদেরকে মর্যাদা দিতে আমি এ সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেছি এবং জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত আমি আপনাদের সহযোগিতা করে যাব, ইনশাল্লাহ।
চট্টগ্রাম চেম্বারের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ওমর হাজ্জাজ বলেন, স্বাধীনতা নারী শক্তি শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করবে। সরকারের সব উন্নয়নের খবর ঘরে ঘরে পৌঁছে দেবে।
স্বাধীনতা নারীশক্তির পরিচালক বিবি মরিয়ম বলেন, বন্দর-পতেঙ্গা আসনের ৩৬ হাজার নারীর অভিভাবক এমএ লতিফ। তার সব চিন্তা, কার্যক্রম মানুষের কল্যাণের জন্য।
নারীশক্তির সহকারী পরিচালক গোলতাজ বেগম শান্তা বলেন, এলাকার কোনো অসুস্থ ব্যক্তি, অসহায় মানুষ এমএ লতিফের ঘর থেকে খালি হাতে পারেনি।
পতেঙ্গা ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আলমের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন পতেঙ্গা থানার ওসি উৎপল বড়ুয়া, বন্দর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. নুরুল আলম, ৩৯ নম্বর ওয়াডের্র কাউন্সিলর জিয়াউল হক সুমন, সাবেক কাউন্সিলর মো. আসলাম, ৪০ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ সভাপতি আবদুল বারেক, ৩৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হোসেন মুরাদ, ৪১ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মোঃ নুরুল আলম প্রমুখ।