বাজার স্থিতিশীল রাখতে মুল্যতালিকা প্রদর্শন বাধ্যতামুলক ভ্রাম্যমান আদালতের
০৪মে,সোমবার,কমল চক্রবর্তী,চট্টগ্রাম,নিউজ একাত্তর ডট কম: দ্রব্যমুল্যের লাগাম টানতে নিয়মিত বাজার মনিটরিং করছে জেলা প্রশাসন। দ্রব্যমুল্যের কারসাজি ঠেকাতে মুল্যতালিকা প্রদর্শন বাধ্যতামূলক করা হয়। নিয়মিত বাজার মনিটরিং এর অংশ হিসাবে মুল্যতালিকা যাচাইয়ের পাশাপাশি খুচরা ও পাইকারী বাজারের সাথে পন্যমুল্য যাচাই করা হচ্ছে। যাতে খুচরা ও পাইকারী ব্যবসায়ীরা কোন সুযোগ নিতে না পারে। নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসাবে আজ নগরীর বিভিন্ন স্থানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয় এবং মুল্যতালিকা প্রদর্শন না করায় বেশ কিছু ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হয়।
আজ সোমবার ৪ মে সকাল ১০ টা থেকে বিকাল ৫:৩০ পর্যন্ত জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ নগরীর গুরুত্বপূর্ণ বাজার ও স্থান গুলোতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুশফিকীন নূর খুলশী, পাচলাইশ,বায়েজিদ ও চান্দগাও এলাকায় সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা,ব্যক্তিগত সুরক্ষা ব্যবহার করার ব্যাপারে জনগনকে সর্তক করেন। নগরীর খুলশি থানার ঝাউতলা বাজার, বহদ্দারহাটের কাচাবাজার সমূহে মূল্য তালিকা প্রদর্শন নিশ্চিত ও অতিরিক্ত মূল্য আদায়কারী দোকান মালিকদের কে সর্তক করেন। এসময় একটি দোকানে অতিরিক্ত দামে আদা বিক্রির অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে দোকান মালিককে জরিমানা করা হয়। এছাড়াও পাচলাইশ এলাকায় ফল বিক্রেতাকে অতিরিক্ত দামে মাল্টা বিক্রির অপরাধে জরিমানা করা হয়। তিনি ১৩টি ১৪,৭০০টাকা জরিমানা করেন।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রেজওয়ানা আফরিন চকবাজার,বাকলিয়া,সদরঘাট ও কোতোয়ালি এলাকায় অভিযান চালায়। এসময় তিনি ৯ টি মামলায় ৯,৬০০( নয় হাজার ছয়শত) টাকা জরিমানা করেন।
করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে মহানগরীর চান্দগাঁও এলাকায় অভিযান পরিচালনা কালে দেওয়ান মহসিন রোড, চেয়ারম্যান কলোনী এলাকায় নীলা হক নামক এক বাড়িমালিক রাজমিস্ত্রি ও নির্মাণ শ্রমিক দিয়ে বাড়ির নির্মাণ কাজ করাচ্ছিলেন। সরকারি আদেশ অমান্য করে বহিরাগত ৮-১০ জন নির্মাণ শ্রমিকদের সমাগম ঘটিয়ে বিপদজনক অবস্থায় নির্মাণ কাজ অব্যাহত রেখে এলাকায় করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ানোর দায়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত ঠিকাদারকে আর্থিক সামর্থ্য বিবেচনায় ২ হাজার টাকা জরিমানা করেন জেলা প্রশাসন চট্টগ্রামের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ তৌহিদুল ইসলাম।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মিজানুর রহমান বন্দর, ইপিজেড, পতেঙ্গা থানা এলাকায় অননুমোদিতভাবে দোকান খোলা রাখায় রিমা গ্লাস হাউসকে(পতেঙ্গা) ৩,০০০(তিন হাজার) টাকা,লেপের দোকান সায়েদ স্টোরকে ১৫০০( এক হাজার পাঁচশত)টাকা জরিমানা করেন।সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত না করার কারণে মুদির দোকান হাসেম স্টোরকে(কাটগড়, ইপিজেড) ৪,০০০(চার হাজার) টাকা জরিমানা করেন। তিনি ৩ টি মামলায় ৮,৫০০(আট হাকার পাচশত) টাকা জরিমানা করেন।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুরাইয়া ইয়াসমিন আকবর শাহ, পাহাড়তলী, হালিশহর ও ডবলমুরিং থানায় করোনা ভাইরাসজনিত প্রাদুর্ভাব প্রতিরোধের লক্ষ্যে সিএমপি পুলিশের সহযোগিতায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে দোকান খোলা রাখায় ২টি সেলুনকে ২,০০০(দুই হাজার টাকা), ৪টি টেইলরের দোকানকে মোট ২,০০০(দুই হাজার টাকা), ১টি কাপড়ের দোকানকে ৫০০(পাঁশত টাকা) ও একটি ইলেকট্রনিক্স এর দোকানকে ১,০০০(এক হাজার টাকা) অর্থদণ্ড প্রদান করেন। এছাড়াও এম্বুলেন্স এ যাত্রী পরিবহন করায় ১০০০(এক হাজার টাকা) অর্থদণ্ড প্রদান করেন। তিনি ৮টি মামলায় ৬,৫০০টাকা জরিমানা করেন।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এস এম আলমগীর চট্টগ্রাম মহানগরের খুলশী, পাচলাইশ, বায়েজিদ ও চান্দগাও এলাকার করোনা ভাইরাস সংক্রামণ প্রতিরোধে জনগণের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি, সামাজিক দূরত্ব ও হোম কোয়ারান্টাইন নিশ্চিতকরণ এবং দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রনে বাজার মনিটরিং করা হয়। এসময় সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন -২০১৮ ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ এ মোবাইল কোর্টের কার্যক্রম পরিচালনা করেন। তিনি ৬টি ভিন্ন ভিন্ন মামলায় ৩,৩০০ টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করেন।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আশিক - উর - রহমান দুপুর ২ টা হতে ৫ঃ৩০ পর্যন্ত নগরীর বন্দর,ইপিজেড এবং পতেঙ্গা এলাকায় করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাব প্রতিরোধের লক্ষ্যে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতকরণ ও বাজার মনিটরিং এ মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন।অভিযানকালে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট এলাকায় মাইকিং করা হয়।এসময় ভোগ্যপন্যে মূল্যতালিকা প্রদর্শন না করার দায়ে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ এর ধারায় মামলা দায়ের করা হয়।অভিযানে ১টি মামলায় ২,০০০(দুই হাজার) টাকা জরিমানা করেন।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ উমর ফারুক কোতোয়ালি, চকবাজার, সদরঘাট,বাকলিয়া এলাকায় অভিযান চালায়। এসময় বাজার মনিটরিংয়ের অংশ হিসেবে চকবাজার ও কাজির দেউরি বাজারে অভিযান পরিচালনা করেন।অভিযানে বাজার মূল্য তালিকা পর্যবেক্ষণ করে বাজার অস্থিতিশীল না করতে বাজার মুল্য তালিকায় ক্র‍য় মুল্য ও বিক্রয় মুল্য প্রদশর্নের ব্যাবস্থাসহ সকল ব্যাবসায়িক কর্যক্রমের কাগজপত্র সংরক্ষণ করার আহবান জানান।পাশাপাশি বাজার মুল্য তালিকা না থাকা ও অধিক মূল্যে পণ্য বিক্রয়ের কারনে শাহ মইনউদ্দিন স্টোর কে ১,০০০টাকা, লীক এন্ড মিটস স্টোরকে ১,০০০ টাকা, শামিম স্টোরকে ৫০০ টাকা,আল মদিনা স্টোরকে ৫০০ টাকা, সাগরিকা স্টোরকে ৫০০ টাকা, আজম স্টোরকে ৫০০ টাকা,আফসার সবজি মালিক কে ৫০০ টাকা, হানফুজ সবজি মালিককে ৫০০ টাকা অর্থদণ্ড দেন। তিনি ৮টি মামলায় ৫,০০০ টাকা প্রদান করেন।
করোনা পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বভাবিক ও ভোগ্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণ না হওয়া পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান, জেলা প্রশাসনের স্টাফ অফিসার টু ডিসি সহকারী কমিশনার মাসুদুর রহমান।