ভাম্যমান আদালতের নিয়মিত অভিযানে ৫০ মামলায় ষাট হাজার টাকা জরিমানা
২৩এপ্রিল,বৃহস্পতিবার,কমল চক্রবর্তী,চট্টগ্রাম,নিউজ একাত্তর ডট কম: করোনা প্রতিরোধে সরকারি নির্দেশনা প্রতিপালন,বাজার মনিটরিং, স্বপ্রণোদিত লকডাউনের আড়ালে অননুমোদিত দোকান বন্ধ রাখা, আড্ডা বন্ধ, বাড়ির নির্মান কাজ বন্ধ, টিসিবি পণ্য বিক্রি মনিটরিং ও ক্রেতাদের নিরাপদ সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিতকরণ ইত্যাদির মাধ্যমে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে মাঠে ছিলো জেলা প্রশাসনের ৯ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ৯ টি টিম। ভ্রাম্যমান আদালত ৫০ টি মামলায় ৬০,৮০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।
বুধবার ২২ এপ্রিল সকাল ৯.০০ টা থেকে বিকাল ৩.০০ টা পর্যন্ত নগরীর বিভিন্ন স্থানে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন জেলা প্রশাসনের ৯ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ৯ টি টিম।
বন্দর, ইপিজেড, পতেঙ্গা এলাকায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুজন চন্দ্র রায়। তিনি জানান, আজকের অভিযানে সেনাবাহিনী পুলিশ সহ অত্র অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় পরিদর্শন করা হয়, অন্যান্য দিনের তুলনায় অধিক যানবাহন ও মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা যায়। সরকারী আদেশ অমান্য করায় দোকান মালিককে জরিমানা করা হয় এছাড়া মাইকিং এর মাধ্যমে জনসচেতনতা সৃষ্টি করা হয়। সর্বমোট ৪ টি মামলায় ৮,০০০ টাকা জরিমানা করা হয়।
ভূমি অধিগ্রহন কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাজমা বিনতে আমিন মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন চান্দগাঁও , চকবাজার, বাকলিয়া এলাকায়। তিনি জানান, অননুমোদিতভাবে খুলে ব্যবসা করা, সামাজিক দূরত্ব না মানা এবং আড্ডাবাজির জন্য উক্ত জরিমানা করা হয়। এছাড়া বাজারসহ যেখানে লোকসমাগম বেশি সেখানে মাইকিং করা হয় এবং সচেতনা বাড়ানোর চেষ্টা করা হয়।সর্বমোট ১০ টি মামলায় ১০০০ টাকা জরিমানা করেন।
অপরদিকে সদরঘাট, কোতোয়ালী, ডবলমুরিং এলাকায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহফুজা জেরিন । তিনি জানান, আজ রাস্তায় গাড়ি এবং মানুষের প্রচুর ভিড় ছিলো। চৌমুহনী মোড়, কদমতলী মোড় এবং বাদামতলী মোড়ে মনিটরিং করা হয়। প্রয়োজন ছাড়া বের হওয়ায় বেশ কয়েকটি গাড়িচালককে জরিমানা করা হয়। এছাড়াও নিয়মমতো অননুমোদিত ভাবে হার্ডওয়্যার এর কিছু দোকান খোলা থাকায় জরিমানা করা হয়। সর্বমোট ১৮ টি মামলায় ১২,২০০ টাকা জরিমানা করা হয়।
পাঁচলাইশ, খুলশী, বায়েজিদ এলাকায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাজমুন নাহার। তিনি জানান,আজ সকাল ৯ টা থেকে বিকাল ৩ টা পর্যন্ত বায়েজিদ, খুলশি ও পাচলাইশ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। আইন অমান্য করার কারনে কয়েকজন দোকানিকে জরিমানা করা হয়। হেলমেট, মাস্ক না পরে এবং একসাথে ২, ৩ জন বাইকে থাকায় ৩ মোটরসাইকেল আরোহীকে জরিমানা করা হয়। সামাজিক দূরত্ব রেখে কাজ করার জন্য সবাইকে সচেতন করা হয়। মোট মামলা -৬ টি, জরিমানা-৭,৬০০ টাকা।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মামনূন আহমেদ অনিক পাহাড়তলী, হালিশহর ও আকবর শাহ এলাকায় করোনা ভাইরাসজনিত প্রাদুর্ভাব প্রতিরোধের লক্ষ্যে বাধ্যতামূলক হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিতকরণ,বাজার মনিটরিং ও সেনা বাহিনীকে আইনানুগ নির্দেশনা প্রদানের উদ্দেশ্যে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। অভিযানকালে এসব এলাকার কাঁচা বাজার পরিদর্শন ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতকল্পে নগরবাসীকে ব্যাপকভাবে সচেতন করা হয়। এ সময়ে এসব এলাকায় মোট ২টি মামলায় সর্বমোট ৭০০ (সাত শত টাকা) জরিমানা করা হয়। যৌক্তিক কারন ব্যাতীত যাত্রীদের রিক্সা, মোটরসাইকেল, প্রাইভেট কার সহ বিভিন্ন যানবাহনে চলাচলে নিষেধ করা হয়। তাছাড়া বিভিন্ন এলাকার বেশ কিছু দোকানের সামনে জনসাধারণকে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করণে সচেতন করে দেওয়া হয়।
বিকাল ৩.০০ ঘটিকা থেকে রাত ৯.০০ ঘটিকা পর্যন্ত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন,
বন্দর, ইপিজেড, পতেঙ্গা থানাধীন অঞ্চলে সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট চাই থোয়াইহলা চৌধুরী মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন। তিনি ২ টি মামলায় ৮০০ টাকা জরিমানা করেন।
পাহাড়তলী, হালিশহর ও আকবর শাহ থানাধীন অঞ্চলে ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ সোহেল রানা ৬ টি মামলায় ৩,৭০০ টাকা জরিমানা করেন।
চান্দগাঁও,চকবাজার,বাকলিয়া থানাধীন এলাকায় ভূমি অধিগ্রহন কর্মকর্তা ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ কায়সার খসরু ৪ টি মামলায় ১৬,০০০ টাকা জরিমানা করেন। এছাড়াও সদরঘাট, কোতোয়ালী, ডবলমুরিং থানাধীন এলাকায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কে এম ইশমাম ৩ টি মামলায় ১,৮০০ টাকা জরিমানা করেন। জনস্বার্থে এই মোবাইল কোর্ট অব্যাহত থাকবে বলে জানান জেলা প্রশাসনের জন সংযোগ কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান।